দেড় ঘণ্টা স্কুলে তালাবদ্ধ ২ শিশু
আর একটি ছুটির ঘন্টা থেকে রক্ষাপেল ওরা
Deprecated: preg_split(): Passing null to parameter #3 ($limit) of type int is deprecated in /home/barishaldorpon/public_html/wp-content/themes/jannah/framework/functions/post-functions.php on line 791
স্টাফ রিপোর্টার : আটকা পড়া শিশুর মা শিরিন জানান, অঙ্ক শেষ করে বের হয়ে গেট বন্ধ পেয়ে শিশুরা চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। প্রায় ১ ঘণ্টা পর সেই শব্দ শুনে স্থানীয় একজন বিষয়টি টের পান। এরও বেশ কিছুক্ষণ পর শিশুদের বের করা হয়।
বরিশাল নগরীর একটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীকে ক্লাসরুমে রেখেই ফটক তালাবদ্ধ করার ঘটনা ঘটেছে। তাদের কান্নার শব্দে বিষয়টি জানাজানি হলে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়।
ঘটনাটি বুধবারের হলেও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলে এটি জানাজানি হয়। ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হবে বলে জানান কর্মকর্তারা।
নগরীর ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কুদঘাটা এলাকায় অবস্থিত ইন্দকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এর চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে মারজান শিকদার ও নুসরাত জাহান মুনমুন।
মারজানের মা শিরিন আক্তার আঁখি জানান, বুধবার স্কুল ছুটির সময় বেলা সাড়ে ৩টার দিকে শিক্ষক মাকসুদা বেগম মারজান ও মুনমুনকে অঙ্ক করতে বলেন। তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাড়ি যাওয়া যাবে না বলে শাসান। তবে তাদের বসিয়ে রেখে শিক্ষক বাড়ি চলে যান। প্রধান শিক্ষকসহ অন্যরাও স্কুল থেকে বের হয়ে যান। ওই দুই শিশু তখনও ক্লাসরুমে বসে অঙ্ক করছিল। তাদের খেয়াল না করেই দপ্তরি স্কুলের ফটক তালা মেরে চলে যান।
শিরিন আরও জানান, অঙ্ক শেষ করে বের হয়ে গেট বন্ধ পেয়ে শিশুরা চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। প্রায় ১ ঘণ্টা পর সেই শব্দ শুনে স্থানীয় একজন বিষয়টি টের পান। বাইরে থেকে ডাকাডাকি করলে মারজান তাকে বাবার মোবাইল ফোনের নম্বর জানায়। কল পেয়ে শিরিন সেখানে যান।
শিরিন বলেন, ‘দৌড়ে আমি স্কুলের দপ্তরি ইমরানের বাড়ি যাই, কিন্তু ইমরান রেগে গিয়ে আমাকে অপমান করে। অনেক বলার পর সে গিয়ে স্কুলের গেট খুলে দেয়। এরই মধ্যে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে আমার বাচ্চা ও আরেক বাচ্চাটিকে উদ্ধার করা হয়। বাচ্চাদের বের করে দিয়ে জনরোষ থেকে বাঁচতে ইমরান ভেতরে ঢুকে নিজেকে তালাবদ্ধ করে রাখে।’
এ ঘটনায় মারজান খুবই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে বলে জানান শিরিন। রাতে শিশুটির জ্বর চলে আসে বলেও তিনি জানান।
স্কুল ছুটির প্রায় ১ ঘণ্টা পরও বাচ্চা ফিরে না আসায় কেন খোঁজ নেননি? এ প্রশ্নে শিরিন জানান, স্কুল শেষে প্রায়ই বাচ্চারা এদিক-সেদিক খেলতে যায়। সেদিনও খেলতে গিয়েছিল বলে তিনি ভেবেছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক তানিয়া সুলতানার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
স্কুল পরিদর্শন শেষে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ মজুমদার বলেন, ‘এটি একটি গর্হিত কাজ হয়েছে। সরেজমিন জানতে বৃহস্পতিবারই স্কুল পরিদর্শন করেছি। সেই সঙ্গে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে একটি তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশও দিয়েছি। রোববারের মধ্যেই এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে চাকুরি বিধিমালা অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’