প্রধান সংবাদবরিশাল জেলার সংবাদ

কাল দ্বার খুলবে পায়রা সেতুর

রেজাউল করিম : কাল ২৪ অক্টোবর দক্ষিনাঞ্চলের ৫০ লাখ মানুষের স্বপ্নের পায়রা সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। কাল রবিবার সকাল ১০ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গনভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সেতুর উদ্বোধন করবেন। ১ হাজার ৪৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকায় নির্মিত প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু ২৪ অক্টোবর চালু করতে সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ।

পায়রা সেতুর প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল হালিম জানান, এরই মধ্যে সেতুর সব কাজ শেষ হয়েছে। এখন সেতু উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে ওই দিনই সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাবে।

দখিনের মানুষের স্বপ্নের এই পায়রা সেতু চালু হলে বরিশাল থেকে কুয়াকাটা যেতে আর ফেরীর দুর্ভোগ পোহাতে হবেনা। আগে যেখানে বরিশাল থেকে কুয়াকাটা যেতে সময় লাগতো ৬ থেকে ৮ ঘন্টা। আর পায়রা সেতু চালু হলে সেখানে সময় লাগবে মাত্র ৩ থেকে ৪ ঘন্টা। এই ফেরীবিহীন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হলে কুয়াকাটা সমুদ্র বন্দর ও পর্যটন কেন্দ্রের এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে। সেই সাথে দক্ষিণাঞ্চলের ব্যবসা-বানিজ্যের দ্বার উম্মোচন হবে। ইতোমধ্যে পায়রা সেতুকে কেন্দ্র করে দক্ষিণাঞ্চলে সরকারের বেশ কিছু মেগা প্রকল্প চলমান রয়েছে।

পায়রা সেতুর প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল হালিম বলেন, এই সেতু খুলে দেয়ার মধ্য দিয়ে দেশের সর্ব দক্ষিণে কুয়াকাটা পর্যন্ত ফেরিবিহীন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হবে। যা বর্তমান সরকারের একটি নতুন মাইলফলক। তিনি বলেন, পায়রা সেতুর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৪শ’ ৭০ মিটার এবং প্রস্থ ১৯.৭৬ মিটার। এটি ফোরলেন বিশিষ্ট সেতু।

২০০ মিটার করে দেশের দীর্ঘতম দুটি স্প্যান বসানো হয়েছে পায়রা সেতুতে। নদীর তলদেশে বসানো হয়েছে ১৩০ মিটার দীর্ঘ পাইল। যা দেশের সর্ববৃহৎ। যার ওপর দিয়েই চলাচল করতে পারবে সব ধরনের যানবাহন। সেতুতে যানাবাহন চলাচলে দিতে হবে টোল। বিদ্যুতের আলোয় রাতে নৈসর্গিক দৃশ্যের অবতারনা হয় পায়রা সেতুতে।

২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই পায়রা সেতুর ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেন। লেবুখালীর পায়রা নদীর উপর সব শেষ সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ২৪ জুলাই। কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভলপমেন্ট (কেএফএইডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্টের (ওএফআইডি) যৌথ অর্থায়নে ১ হাজার ৪শ’ ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণের দায়িত্ব পায় চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান রোড এন্ড ব্রীজ কোম্পানী লিমিটেড।

কার্যাদেশে সেতু নির্মাণে ৩৩ মাস সময় বেঁধে দেয়া হলেও দুই দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের আগেই যান চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করে দেয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন

মন্তব্য করুন

Back to top button