চরমোনাইর পীর সৈয়দ ফজলুল করিম (রহ:) এর মৃত্যু বার্ষিকী আজ
Deprecated: preg_split(): Passing null to parameter #3 ($limit) of type int is deprecated in /home/barishaldorpon/public_html/wp-content/themes/jannah/framework/functions/post-functions.php on line 791
স্টাফ রিপোর্টার ॥ এই উপমহা দেশের ইসলামী আন্দোলনের প্রান পুরুষ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা আমীর আপোষহীন ধর্মীয় আধ্যাত্মিক ও রাজনৈতিক নেতা মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মাদ ফজলুল করীম পীর সাহেব চরমোনাই (রহ.) এর ১৪তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ ২৫ নভেম্বর।
মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মাদ ফজলুল করীম পীর সাহেব চরমোনাই ২০০৬ সালের ২৫ নভেম্বর সকাল ৯ টায় লাখো কোটি ভক্ত মুরীদদেরকে শোক সাগরে ভাসিয়ে চরমোনাই বার্ষিক মাহফিল শুরুর ১দিন পূর্বে চমোনাইর নিজ বাসভবনে জিকিররত অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
আল্লাহর এই অলি ছোট বেলা থেকেই দ্বীনদার ছিলেন। পিতা হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ ইছহাক (রহ:) চরমোনাই দরবারের প্রতিষ্ঠাতা পীর সাহেব এর কাছ থেকেই তিনি ইলেম শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। পীর সাহেব চরমোনাই (রহ.) সৈয়দ ফজলুল করিম ১৯৩৫ সালে বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাইতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মাওলানা সৈয়দ ইছহাক (রঃ) ছিলেন চরমোনাই দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা পীর। তার ৫ পুত্রের মধ্যে মেঝ পুত্র সৈয়দ ফজলুল করিম পিতার কাছ থেকে খেলাফত লাভ করেন।
সৈয়দ ফজলুল করিম চরমোনাই আলিয়া মাদ্রাসা থেকে ডিগ্রি নেয়ার পর ১৯৫৭ সালে ঢাকার লালবাগ মাদ্রাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস পাস করেন। এরপর চরমোনাই মাদ্রাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৭৩ সালে পিতা সৈয়দ ইছহাক (রঃ) এর ইন্তেকালের পর তিনি আমিরুল মুজাহিদীনের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন।
সৈয়দ ফজলুল করিম ছাত্র জীবনে নাছিরে মিল্লাত নামে একটি ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে ছাত্রদেরকে সংগঠিত করে জনকল্যানমূলক কর্মকান্ডে নিজেকে নিয়োজিত করেন। এ ছাড়া দ্বীনের দাওয়াতের পাশাপাশি ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ছাত্র জীবনেই পিতার সাথে নেজামে ইসলামী পার্টির রাজনীতিতে স্বক্রিয় হন। তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছিলেন। তিনি হাফিজী হুজুরের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ সালে দেশ বরণ্য ওলামা-মাশায়েখদের নিয়ে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন প্রতিষ্ঠা করেন। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি ঐ সংগঠনের আমীরের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ভ্রান্ত মওদুদী জামাত ও নারী নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আপোষহীন আন্দোলন-সংগ্রামে স্বক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।
ইসলামী দল ও সংগঠনের ঐক্যের ব্যাপারে তিনি ছিলেন আন্তরিক। বিএনপি সরকারের ১৯৯১-১৯৯৬ মেয়াদে বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসারিনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্লাট ফর্ম সম্মিলিত সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়কারী এবং ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন সফলতার সাথে।
তিনি আরাফাতের ময়দানে এক ভাষনে বর্তমান সাম্রাজ্যবাদের রাবারষ্টাম্প জাতিসংঘের পরিবর্তে মুসলিম দেশগুলোকে মিলে ইসলামী জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার জন্য আহবান জানান। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আওয়ামী লীগ আমলে তিনি ফতোয়া বিরোধী রায় বাতিলের দাবিতে কাফনের কাপড় নিয়ে সারাদেশে আন্দোলন গড়ে তোলেন।
২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামী জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। বিভিন্ন সময় শাসক গোষ্ঠীর মিথ্যা মামলা ও হয়রানিকে উপেক্ষা করে পীর সাহেব তার সমস্ত জীবন ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠার জন্য নিবেদিত করে গেছেন। প্রায় ৩০ বছর যাবৎ সারা বছর ব্যাপী দেশের গ্রাম-গঞ্জে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে ইসলাম প্রচারের পাশাপাশি তিনি দেশের গন্ডি পেড়িয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, আফগানিস্তান ও মালদ্বীপসহ এশিয়ার সকল রাষ্ট্র সফর করেছেন। মধ্যপ্রাচ্য ইউরোপ, আমেরিকা ও আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পীর সাহেবের অগনিত ভক্ত রয়েছে।