মুহাম্মদ আশরাফ আলী : বাংলাভাষীর বেশির ভাগই মুসলমান। অস্ত্রবলে নয়, আল্লাহর একাত্মে বিশ্বাস করে এ দেশের মানুষ ইসলাম গ্রহণ করে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দুই প্রিয় সাহাবির মাধ্যমে বাংলাদেশে ইসলাম প্রচারের সূচনা হয়। বাণিজ্য ও ইসলাম প্রচারের জন্য চীনে যাওয়ার পথে বাংলাদেশে যাত্রাবিরতি করেন তাঁরা। তাদের মাধ্যমে এ দেশে ছড়িয়ে পড়ে ইসলামের দাওয়াত। বলাই বাহুল্য, সাহাবিরা ইসলাম প্রচারে গণমানুষের বাংলা ভাষাকেই প্রাধান্য দিয়েছিলেন। কারণ আরব থেকে কারও পক্ষে এ দেশে এসে আরবি ভাষায় কোনো বাংলাভাষীকে দীন সম্পর্কে বোঝানো সম্ভব নয়। মানুষ সৃষ্টি আর ভাষার ইতিহাস একসূত্রে গাঁথা। মানুষকে আল্লাহ স্বয়ং ভাষা শিক্ষা দিয়েছেন। প্রথম মানব হজরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টির পর আল্লাহ তাঁকে সৃষ্টির সবকিছুর নাম শিক্ষা দেন। এ শিক্ষা প্রাপ্তির মাধ্যমে হজরত আদম (আ.) ভাষা সম্পর্কে অবহিত হন। সুরা ইবরাহিমের ৪ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি রসুলদের তাদের স্বজাতির ভাষাভাষী করেই পাঠিয়েছি, যাতে স্পষ্টভাবে তাদের বোঝাতে পারে।’ ভাষার বৈচিত্র্য আল্লাহর কুদরত। আল্লাহকে যে কোনো ভাষায় ডাকা যায়। যে কোনো ভাষায় তাঁর রহমত কামনা করা যায়। বুখারির হাদিসে বলা হয়েছে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ সব ভাষা জানেন।’ আল্লাহর এ কুদরতের কথা উল্লেখ করে সুরা রুমের ২২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তাঁর আরও একটি নিদর্শন হলো আকাশ ও জমিনের সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাব প্রকাশের ভাষা ও বর্ণের সৌন্দর্য। নিশ্চয়ই এতে জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শনাবলি রয়েছে।’