বেকার পড়ে আছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি অংশ
পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র
Deprecated: preg_split(): Passing null to parameter #3 ($limit) of type int is deprecated in /home/barishaldorpon/public_html/wp-content/themes/jannah/framework/functions/post-functions.php on line 791
এ এম মিজানুর রহমান বুলেট, কলাপাড়া : বেকার পড়ে আছে ঋণের টাকায় তৈরি পটুয়াখালীর পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট। ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিটের নির্মাণকাজ শেষ হয় অনেক আগেই। কিন্তু পদ্মার রিভার ক্রসিংয়ে সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ না হওয়ায় একটি ইউনিট এখনও অলস পড়ে আছে।
বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ বিনিয়োগে তৈরি হওয়া এই বিদ্যুৎ প্রকল্পটি লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে পড়ছে। দ্রুত সঞ্চালন লাইন নির্মাণ শেষ করতে না পারলে এবং দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বেকার থাকলে দু’দেশের যৌথ বিনিয়োগে গড়ে তোলা কোম্পানিটি ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হবে। এ কারণে লোকসানের মুখে পড়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
বিসিপিসিএলের সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী এলাকায় রয়েছে ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং পায়রা তাপ বিদুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) কর্তৃপক্ষ প্রথম পর্যায়ে ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিটের নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করেছে। যার একটি ২০২০ সালের ১৫ মে থেকে জাতীয় গ্রিডে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে এবং ৬৬০ মেগাওয়াটের দ্বিতীয় ইউনিটটি একই বছরের ৮ ডিসেম্বর নির্মাণকাজ শেষ করে উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন তৈরির কাজ শেষ না হওয়ায় একটি ইউনিট এখন বেকার পড়ে আছে।
দুই দেশের যৌথ বিনিয়োগে পরিচালিত এই প্রকল্পে এ পর্যন্ত ২ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে। যার মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক থেকে ১ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলারের ঋণ নেওয়া হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী বিসিপিসিএল নির্ধারিত সময় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকাজ শেষ করেছে। তবে কয়েক দফা সময় বাড়ালেও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) পদ্মার রিভার ক্রসিংয়ের কাজ শেষ করতে না পারায় গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকার আমিন বাজার পর্যন্ত সঞ্চালন লাইন নির্মাণ সম্পন্ন করা যায়নি। ফলে বাধ্য হয়ে দুটি ইউনিটের একটি মাত্র ইউনিট সচল (চালু) রাখছে বিসিপিসিএল। এর পরও ঋণের কিস্তি পরিশোধসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় মেটাতে কোম্পানিটিকে অর্থ সংকটে পড়তে হবে না বলে দাবি করেন পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্তাব্যক্তিরা।
পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজোয়ান ইকবাল খান জানান, ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটই বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের আওতায় চলে এসেছে। ইতোমধ্যে গত বছরের ১৫ মে পায়রা থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিটের বিদ্যুৎ বাণিজ্যিকভাবে সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু পদ্মার রিভার ক্রসিংয়ের কাজ শেষ করতে না পাড়ায় গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকার আমিন বাজার পর্যন্ত সঞ্চালন লাইনের নির্মাণকাজ এখনও শেষ হয়নি। ফলে ৬৬০ মেগাওয়াটের দ্বিতীয় ইউনিটের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। আশা করছি, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সঞ্চালন লাইনের নির্মাণকাজ শেষ হয়ে যাবে। এ লাইনটির কাজ হয়ে গেলে ১৩২০ মেগাওয়াটের পুরো বিদ্যুৎই জাতীয় গ্রিডে দিতে সক্ষম হবো। এর ফলে পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে দেশে বিদ্যুতের বড় একটি চাহিদা পূরণ হবে।
পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক শাহ আব্দুল মাওলা জানান, ৬৬০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট নিয়ে ১৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র গঠিত। এ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে চীনের এক্সিম ব্যাংক থেকে ১ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেওয়া হয়েছে।
আশা করি সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই এ ঋণ পরিশোধ করতে পারবে। সরকার সেভাবেই পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।