দেশে ৫১১ টি ছোটনদী-খাল খনন করা হচ্ছে : পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী
Deprecated: preg_split(): Passing null to parameter #3 ($limit) of type int is deprecated in /home/barishaldorpon/public_html/wp-content/themes/jannah/framework/functions/post-functions.php on line 791
স্টাফ রিপোর্টার : পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম বলেছেন, সাংবাদিকরা সবথেকে নভেল প্রফেশনে রয়েছেন। আপনারা যদি সত্য ও বস্তুনিষ্ট রিপোর্ট পরিবেশন করেন তাহলেই বরিশালের উন্নয়ন হবে। বরিশালের উন্নয়নের প্রথম কাতারের সৈনিক হলেন আপনারা। আপনার যদি সত্য প্রকাশের সাহস না থাকে তাহলে বুঝবো আপনি আপনার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলেন। সাংবাদিকতা করতে এসে ভয় পেলে চলবে না, সাহসিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আপনারা সবাই যদি সত্য সংবাদটি দেন তাহলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সঠিক সংবাদ পরিবেশন করুন, বাড়তি দিবেন না।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বরিশাল নগরীর বান্দরোডস্থ পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্টহাউজে বরিশাল প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দর সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
এসময় প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, আমি প্রতি সপ্তাহে বরিশালে আসি, আমি ঘটা করে কথা বলি না। আমি সকল সাংবাদিকের সাথে কথা বলি এবং ইন্টারভিউ চাইলে ইন্টারভিউও দেই। সাংবাদিকদের ওপর নির্ভর করে সত্য সংবাদ পরিবেশন করা। আপনার ওপর যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, তা পালন না করলে আল্লাহর কাছে দায়ী থাকতে হবে। আমি যদি পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব পালন না করি, আমাকে জবাবদিহিতা দিতে হবে। পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আমার কাজের ওপর আন্তরিকতার বিন্দুমাত্র ঘাটতি নেই, সততার বিন্দুমাত্র ঘাটতি নেই। আমি আমার কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশের নদীভাঙ্গন এলাকার দুর্দশাগ্রস্থ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছি।
তিনি বলেন, প্রতিদিন সকালে আমি ১ ঘন্টা ব্যয় করি পেপার দেখে। পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সংশ্লিষ্ট যতো নিউজ হয় তা কাটিং করে আমাকে দেয়া হয়, যা পরে আমি নোট করি, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সম্ভাব্য করনীয় বিষয়ে নির্দেশনা দেই। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর বাঘা বাঘা ১১ জন ঠিকাদারকে কাজ দেয়া বন্ধ করে দিয়েছি। কারণ তাদের এতো কাজ দেয়া হয়েছে যে তারা তা শেষ করতে পারে না। আমরা তাদের বলেছি আগের কাজ শেষ করুন তারপর নতুন টেন্ডার দেবো। পুরাতন কাজ শেষ না হলে নতুন কাজ দেয়া হবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও এতে সম্মত দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে দিয়েছেন। বাংলাদেশের ডেল্টাপ্লান ২১০০ এর ৮০ শতাংশ কাজ পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে করানো হবে। এ মুহুর্তে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের ১০৬ প্রকল্প চলমান আছে। এরসাথে নতুন আরো ১৭ টি নতুন প্রকল্প আমাদের অনুমোদন হয়েছে।
তিনি বলেন, ডেল্টাপ্লান ২১০০ এর মধ্যে ৬৪ জেলার খাল খননের একটি প্রকল্প রয়েছে। গোটা বাংলাদেশে ৫১১ টি ছোটনদী-খাল খনন করা হচ্ছে এবং এছাড়া ৮০ টি ছোট জলাশয়ও রয়েছে। এগুলোর কাজ ৬০ শতাংশের মতো কাজ হয়ে গেছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা হলো বড় বড় নদীগুলোকে আমরা ড্রেজিং করে ছোট করে ৫-৭ কিলোমিটারের মধ্যে নিয়ে এসে বাকী জমিগুলো রিক্লেম করা। সেখানে আমরা ফসল উৎপাদন করবো এবং তার বাহিরের অংশে বাধ দিয়ে বনায়ন করবো। ফলে প্রতিবছর বর্ষার সময়ের বাড়তি পানি বাধের বাহিরে ঢুকতে পারবে না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বরিশালের জলাবদ্ধতা নিরসনে একটি ভিন্ন প্রকল্প নিতে হবে। যদিও বরিশাল শহরের ভেতরের খালগুলো রক্ষনাবেক্ষন সিটি করপোরেশনের করার কথা কিন্তু তারা তা করতে পারছে না। আমি মেয়রকে বলেছি শহরের প্রধান ৪ টি খালের প্রকল্প আমি করে দিবো। আমরা ৪ টি খালকে ড্রেজিং করাবো এবং গেট করে বোটপাস দেয়া হবে। খাল খনন হয়ে গেলে বর্ষার পানি তা দিয়ে নেমে যাবে ফলে জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পাবো। তবে একেবারে জলাবদ্ধতা নিরসন করতে হলে শহরের মধ্যে সোয়ারেজ সিস্টেমটা ঠিক করতে হবে। খাল খনন হলে বর্ষায় সড়কের ওপর জমে থাকা পানি নেমে যাবে একবারে জলাবদ্ধতা হবে না তা বলা যাবে না।
তিনি বলেন, আমার ইচ্ছে হলো বরিশালকে সুন্দর শহরে পরিণতো করা। কিন্তু বিভিন্ন কারণে আমি যেভাবে চেয়েছিলাম সেভাবে এগুচ্ছে না। শওকত হোসেন হিরণ যখন মেয়র ছিলেন তখন কিন্তু বরিশাল শহরের উন্নয়ন হয়েছে। তারআগে ও পরে উন্নয়ন হয়নি। এখন আমার ইচ্ছে বরিশালকে সুন্দর করার।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এমপি হয়ে কখনো কল্পনাও করিনি যে প্রতিমন্ত্রী হবো। হঠাৎ মন্ত্রী পরিষদের সচিব ফোন দিয়ে জানিয়েছিলেন যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী হিসেবে মনোনায়ন দিয়েছেন। তার পরেরদিন গিয়ে আমি প্রতিমন্ত্রী হলাম। আজ আমি রাজনীতিবিদ হলেও জনগনের সেবক হিসেবে নিজের পরিচিতি পেতে চাই।
বরিশালের কথা উঠলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখানকার কথা আলাদাভাবে শুনতে চান বলে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলেন, “সবকিছুর ভেতরে প্রধান কথা হচ্ছে শান্তি। যেখানে শান্তি-শৃঙ্খলা থাকবে সেখানে উন্নয়ন এমনিতেই হবে।আর যেখানে নাই সেখানে উন্নয়ন হবে না।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহা. ইসমাঈল হোসেন নেগাবান মন্টু, সাধারণ সম্পাদক কাজী মিরাজ মাহমুদ, জেষ্ঠ্য সাংবাদিক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু, নাছিম উল আলম, সৈয়দ দুলাল, গোপাল সরকার, মোশাররফে হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক মোফাজ্জেল হোসেন পাঠাগার সম্পাদক রুবেল খান, এম. মিরাজ হোসাইন, এম জহির, ছিলেন আওয়ামীলীগ নেতা মাহামুদুল হক খান মামুন, জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জোবায়ের আব্দুল্লাহ জিন্নাহ ও মহানগর ছাত্রলীগের নেতা মাহাদসহ প্রমুখ।