পশুরহাটে পশু আছে ক্রেতা কম
Deprecated: preg_split(): Passing null to parameter #3 ($limit) of type int is deprecated in /home/barishaldorpon/public_html/wp-content/themes/jannah/framework/functions/post-functions.php on line 791
স্টাফ রিপোর্টার : ঈদ উল আযহার মাত্র ৪ দিন বাকি থাকলেও বরিশালে পশুরহাটগুলোতে ক্রেতা সংকট থাকায় বিক্রেতাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। বরিশাল নগরীতে ৪টি হাটে এখনও পশুকেনাবেচা শুরু হয়নি। জেলার বিভিন্ন উপজেলার সাপ্তাহিক হাটে ক্রেতার দেখা মিলছে না। ব্যবসায়ী ও ইজারাদাররা পশু বিক্রি শেষ করে বাড়ি ফিরতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
অপরদিকে ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন, বিক্রি কম হলেও সিন্ডিকেট করে দাম কমাচ্ছেন না বিক্রেতারা। সংশ্লিস্টরা ধারনা করছেন, বরিশালের হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির বালাই না থাকায় করোনাভাইরাস সংক্রামন আতংকে হাটে ক্রেতা আসছেন কম।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের হাটবাজার শাখার পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ জানান, নগরীতে বাঘিয়া ও পোর্টরোড কসাইখানা দুটি স্থায়ী হাট ছাড়া রূপাতলী সোনারওগাও টেক্সটাইল মিল এলাকায় ও কাউনিয়া টেক্সটাইল মিল গেটের সামনে দুটি অস্থায়ী হাটের অনুমতি দেয়া হয়েছে। তারমধ্যে কসাইখানা হাটে এবার পশু বিক্রি না হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। অপর ৩টি হাটে সোমবার থেকে ৫ দিন পশু বিক্রির অনুমতি দেয়া হয়েছে।
নগরীর রুপাতলী অস্থায়ী পশুর হাটে সোমবার গরু কিনতে যান ক্রেতা মুহাম্মদ তাওহীদুল ইসলাম। তিনি জানান, হাটে গরু উঠেছে, কিন্তু বেচাকেনা নেই। দাম বেশি চাওয়ায় ক্রেতাদেরও আগ্রহ নেই। তার দেখামতে, সদর উপজেলার চরমোনাই পশুর হাটের চিত্রও একই রকম। আগামী ২/১দিনে দাম না ছাড়লে লোকসানে পড়তে হবে ব্যবসায়ীদের। স্বাস্থ্যবিধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি কারো নজরদারীর নেই। কাউনিয়া টেক্সটাইলের সামনে অস্থায়ী হাটে অল্পসংখ্যক গরু উঠেছে। সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দা মো: জুয়েল জানান, গতকাল সোমবার ১৫/২০টি গরু উঠেছে। কিন্তু ক্রেতা নেই।
মেঘনাবেষ্টিত উপজেলা হিজলায় জানা গেছে, সোমবার বেলা ১টায় উপজেলার টেকেরহাট বাজারে প্রচুর গরু উঠেছে। কিন্তু ক্রেতা নেই। ওই হাটের ইজারাদার হারুন অর রশিদ বেলা আড়াইটায় জানান, তখন পর্যন্ত দুটি গরু বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন, গত বছর যে গরু ১ লাখ ছিল, এবার ৮০ হাজার টাকাও দিতে চাচ্ছেন না ক্রেতারা। ইজারাদার বলেন, করোনা সংক্রামনের ভয়ে মানুষ আসছেন না।
ওই হাটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুপুরের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাট পরিদর্শনে গেলে সকলের মধ্যে মাস্ক পড়ার তোড়জোর শুরু হয়। তিনি চলে যাওয়ায় কারো মাস্ক পকেটে আবার কারো নাকের নিচে ঝুলছিল। স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল হোসেন দফাদার বলেন, গরু-ছাগলের কাংক্ষিত দাম পাওয়া নিয়ে বিক্রেতাদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। কিন্তু শেষ মুহুর্তে বাজার জমজমাট আশায় এখনও দাম কমাচ্ছেন না তারা।
বাকেরগঞ্জের চামটা পশুরহাটের ইজারাদার বায়জিদ বাপ্পির সঙ্গে সোমবার মুঠোফোনে কথা হয়। তিনি বলেন, হাটে গরু আছে, মানুষ নেই। তিনি বলেন, গতবছর ঈদ উল আযহার আগে চামটা হাটে দৈনিক ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা খাজনা উঠতো। কিন্তু এবার ৪০ হাজারের বেশী পাওয়া কস্টকর হয়ে পড়েছে। ওই হাটে মাঝারী আকারের গরু ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জেলার অন্যতম বৃহৎ বোয়ালীয়া হাটের ইজারাদারও বায়জিদ বাপ্পি। তিনি বলেন, বৃহৎ হাট হিসাবে ঈদের ৪দিন আগে যেমন জমজমাট হওয়ার আশা ছিল তেমন হয়নি। এ অবস্থায় তারা ইজারা খরচ উঠাতে পারবেন কিনা তা নিয়ে শংকিত।
জেলার আরেক ঐতিহ্যবাহি পশুরহাট গৌরনদী উপজেলার কশবা পশুরহাট সোমবারও জমে উঠেনি। সেখানকার একাধিক বিক্রেতা জানিয়েছেন, এবার করোনায় বিক্রি হবে না এমন ধারনা করে পাইকাররা গরু-ছাগল এনেছেন কম। কমেছে ক্রেতাও।
বানারীপাড়ার গুয়াচিত্তা পশুরহাটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানে গরু-ছাগল আছে প্রচুর। কিন্তু ক্রেতা কম। এ অবস্থাও দাম কমাচ্ছেন না বিক্রেতারা। হাটে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই বলে স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে। সেখানকার ইজারাদার মিলন মৃধা জানান, পশুরহাটে বেচাকেনা নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। ###