বরিশাল বিভাগের সংবাদ
চাকরি দিতে ১৫ লক্ষ টাকা ঘুষ নেয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন

সঞ্জীব দাস, বরগুনা : বরগুনার বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়নের উত্তর কাকচিরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি রেজাউল করিম মৃধা ও প্রধান শিক্ষক পান্না মিয়ার বিরুদ্ধে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার পদে নিয়োগে নিউটন নামের প্রার্থীর কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা উৎকোচ গ্রহনের অভিযোগে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
নিউটন তার বাবার শেষ সম্বল ১৩ শতাংশ জমি বিক্রি করে ১৫ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে এ যাবত চাকরি কিংবা ঘুষের টাকা কিছুই পাইনি ।
এই ঘটনায় ক্ষুব্দ হয়ে এলাকাবাসী ঘুষের টাকা ফেরত এবং বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে। বামনা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ঘটনার বিষয়ে পাঁচ সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করেছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় উত্তর কাকচিরা বাজারে এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য গাউসুল আলম সেন্টুর সভাপতিত্বে ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ইউপি সদস্য মোঃ ছগীর, বিশিষ্ট সমাজসেবক নিজাম মুন্সী, প্রিন্স হাজী প্রমূখ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উত্তর কাকচিড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পান্না মিয়া ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রেজাউল করিম মৃধা বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটরের একটি শুন্য পদে পত্রিকায় একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আবেদনকারি নিউটন ১১ জুন তারিখ নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে প্রথম স্থান অধিকার করেন। পরে ওই পদের জন্য প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি নিউটন হাওলাদারের কাছে উৎকোচ দাবী করলে স্কুলের পার্শ্ববর্তী নিউটনের পৈত্রিক সম্পত্তি ১৩ শতাংশ জমি বিক্রি করে মধ্যস্থতাকারী হুমায়ুন হাওলাদারের মারফত ১৫ লাখ টাকা প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে দিয়েছেন বলে নিউটন হাওলাদার জানান। পরবর্তীতে ওই নিয়োগ বাতিল করে পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি ২৮ জুলাই নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে লিমন নামের একজনকে ওই পদের জন্য নির্বাচন করেন।
নিউটন অত্যন্ত গরীব ঘরের ছেলে। তার বাবা পানের বরজে দিন মজুরের কাজ করেন। নিউটনের চাকুরীর বয়স প্রায় শেষ, তাই তার বাবার শেষ সম্বল জমিটুকু বিক্রী করে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে ১৫ লাখ টাকা চাকুরীর জন্য দিতে বাধ্য হন।
জানতে চাইলে সকল অভিযোগ অস্বিকার করে প্রধান শিক্ষক পান্না মিয়া জানান, নিউটনের কাছ থেকে আমি কোন টাকা নেইনি। প্রথম নিয়োগ পরীক্ষা কেনো বাতিল হলো এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, নিয়োগ বোর্ডে সভাপতি ও ডিজির প্রতিনিধির মধ্যে তর্ক বিতর্ক হলে সভাপতি নিয়োগ বোর্ড থেকে চলে যান, যার পরিপ্রেক্ষিতে ওই নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল আর ঘোষণা করা হয়নি।
এ বিষয়ে বামনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা সুলতানা বলেন, ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলেই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।