কুলা বানিয়ে টানাপোড়েনে চলে সংসার
Deprecated: preg_split(): Passing null to parameter #3 ($limit) of type int is deprecated in /home/barishaldorpon/public_html/wp-content/themes/jannah/framework/functions/post-functions.php on line 791
স্টাফ রিপোর্টার : রাখালতলা গ্রামের গীতা রানী বলেন, ‘সংসার চালাইন্নাই কষ্ট। পোলাপানের পড়ালেহা চালান লাগে। এই কুলা বানাইয়া এহন চলে না।
৭০ বছর বয়সী প্রিয়লাল দাশ কুলা তৈরি করে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন ৫০ বছর ধরে। তার পূর্ব পুরুষরাও কুলা তৈরির কাজ করতেন। তবে কুলা তৈরি করে এখন সংসার চালানো বেশ কষ্টকর হয়ে পড়ছে প্রিয়লালের পক্ষে। কারণ কেউ আর আগের মতো কুলা ব্যবহার করে না। ফলে বিক্রিও গেছে কমে।
বরিশালের উজিরপুর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কালির বাজার সংলগ্ন রাখালতলা গ্রামে প্রিয়লাল দাশসহ আরও অনেকেই কুলা বানিয়ে বিক্রি করেন। কিন্তু তারা বেশ সমস্যার মধ্যেই রয়েছেন। যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে চাহিদা কমে যাওয়ায় কুলা তৈরি করে এখন সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে অনেকের। তাই অনেকেই এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন।
রাখালতলা গ্রামের ইচলাদী বাজারে পাইকারি মুল্যে বিক্রি হয় কুলা। সেখান থেকে নানা জায়গায় চলে যায় বিক্রির জন্য। ইচালাদী বাজারে একটি কুলা ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও শহর অঞ্চলে ১১০ টাকা থেকে ২শ টাকায় বিক্রি হয়।
প্রিয়লাল দাশের স্ত্রী সোনাই দাশ বলেন, ‘বিয়ার পর থেইকা কুলা বানাই আর বেচি সংসার চালাই। আমাদের অন্য কোনো রোজগারের পথ নাই। একটা কুলা বানাইতে দুই ঘন্টার মতো সময় লাগে। সারা দিনে ৬/৭টার বেশি বানাইতে পারি না। বাজারে বিক্রি কইরা একেকটা কুলায় ১৫ /২০ টাকার বেশি লাভ হয় না।
রাখালতলা গ্রামের রাম কৃষ্ণ দাসের স্ত্রী গীতা রানী জানান, ‘সংসার চালাইন্নাই কষ্ট। পোলাপানের পড়ালেহা চালান লাগে। এই কুলা বানাইয়া এহন চলে না। এইয়ার চাহিদা শহরের দিকে অনেক কইম্মা গেছে প্লাস্টিকের জিনিসের কারণে। সরকার যদি মোগো দিক দেখতো তয় আমরা একটু ভালোভাবে থাকতে পারতাম।
অতুল দাশ নামে আরেকজন বলেন, ‘একটা বাঁশ কেনতে হয় ১৫০ টাহা দিয়া। কুলা একটা বানাইতে ৩০ টাহা খরচ হয়। এইয়া বেচি ৪৫ হইতে ৫০ টাহার মধ্যে। ডেইলি তো অনেকগুলা বানাইতে পারি না। স্বামী স্ত্রী দুইজনে মিল্লা দিন রাইত কাম কইরা ১০টা কুলা বানাইতে পারি। এতে চলতে কষ্ট হইয়া যায়।একই গ্রামের শংকর চন্দ্র দাশ বলেন,‘ আমাগো বাপ দাদারা এই কুলা, ডালা ও চালইন বানাইতো। সেই লাইন ধইরা মোরাও বানাই। এইয়া বানাইয়াই আমরা চলি। খুব সমস্যার মধ্যে চলতে হয়। মোগো সরকার যদি কোনো ব্যবস্থা কইরা দেতো তয় ভালো হইতো। এমনেই কুলা বানানো অনেকেই ছাইড়া দেছে। কেননা এয়া দিয়া সংসার চালাইন্না খুব কষ্টের।’