আকস্মিক অর্ধেকে নেমেছে ইলিশের আমদানি
Deprecated: preg_split(): Passing null to parameter #3 ($limit) of type int is deprecated in /home/barishaldorpon/public_html/wp-content/themes/jannah/framework/functions/post-functions.php on line 791
স্টাফ রিপোর্টার : আকস্মিকভাবেই বেড়ে গেছে রুপালি ইলিশের দাম। মণপ্রতি বেড়েছে ৪ হাজার টাকা। ভরা মৌসুমে বরিশালে আমদানিও কমেছে আশঙ্কাজনক হারে, অর্ধেকের নিচে। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, বৈরী আবহাওয়ায় সাগরে ইলিশ শিকারে যেতে পারছেন না জেলেরা। চার দিন ধরে উপকূলে শত শত মাছ ধরার ট্রলার আটকে আছে। এদিকে মৌসুম শুরু হলেও সাগরে ইলিশ ধরায় প্রতিবন্ধকতায় হতাশা প্রকাশ করেছেন মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলেরা।
সোমবার বরিশাল মৎস্য অবতারণ কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় মোকামে কর্মচাঞ্চল্য অনেকাংশে কম। সাগরের বোট না আসায় আশপাশের নদী ও সাগর মোহনার ইলিশের পরিমাণই বেশি। আমদানি কম থাকায় দামও বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা। মণপ্রতি যা উঠেছে ৪ হাজার টাকার ওপর। অথচ গত সপ্তাহেও ইলিশে সয়লাব ছিল নগরী।
জানতে চাইলে বরিশাল মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি অজিৎ দাস মনু বলেন, গত দুই থেকে তিন দিন ধরে ইলিশের আমদানি অর্ধেকে নেমে এসেছে। ভরা মৌসুমে এটি মৎস্য সেক্টরে হতাশার সংকেত। তিনি বলেন, গতকাল সোমবার ২০০ মণ ইলিশও ওঠেনি। যদিও গত সপ্তাহে দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ মনের ওপর ইলিশের আমদানি হয়েছে। ওই সময়ে সাগর থেকে ইলিশবোঝাই বোট এসেছিল। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে এলসি (৫০০ থেকে ৯০০ গ্রাম) সাইজের ইলিশ কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ৭০০ টাকা। সোমবার ওই সাইজের ইলিশের দর ছিল ৮০০ টাকার ওপরে। একইভাবে কেজি সাইজের ইলিশ কেজিপ্রতি ৮০০ টাকার স্থলে এখন বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকায়। ১ হাজার ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৯০০ টাকার স্থণে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে হাজার টাকার ওপরে। ৪০০ গ্রামের নিচের ইলিশ ১০০ টাকা বেড়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকার ওপরে।
আড়তদার সমিতির নেতা অজিৎ দাস বলেন, মাছের আমদানি কম থাকায় মণপ্রতি ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা বেড়ে গেছে। এর কারণ হিসেবে তিনি জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত চার দিন ধরে পটুয়াখালীর মহিপুর, বরগুনার পাথরঘাটা সাগর উপকূলে শত শত ইলিশ ধরা বোট অপেক্ষায় রয়েছে। উত্তাল সাগরে নামতে পারছেন না জেলেরা। ভরা মৌসুমে এখন জেলেদের গভীরে সাগরে থাকার কথা। কিন্তু এ অবস্থা চলতে থাকলে ইলিশের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করেছেন তিনি। পোর্ট রোডের মৎস্য ব্যবসায়ী ইয়ার উদ্দিন বলেন, সাগরে বোট না যেতে পারায় চাঙা ইলিশ মোকাম ফের ঝিমিয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এখন যে ইলিশ আসছেম তা সাগর মোহনা ও আশপাশের মেঘনাসহ বিভিন্ন নদীর। এর ফলে ব্যবসায়ী, জেলে, শ্রমিকের মধ্যেও হতাশা দেখা দিয়েছে।
মহিপুর ট্রলার মাঝি সমিতির সভাপতি নুরু মাঝি বলেন, দীর্ঘ সময় সাগরে নিষেধাজ্ঞা থাকার পর এক সপ্তাহের বেশি সময় প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ে। জেলেদের মুখেও হাসি ফোটে। কিন্তু ভরা মৌসুমে এখন জেলেরা তীরে পড়ে আছেন। সাগরে না যেতে পারলে লোকসানে পড়তে হবে তাদের। এছাড়া ভিনদেশী জেলেদেরও এ সময়ে বাংলাদেশের সমুদ্র সীমানায় ঢুকে পড়ে ইলিশ শিকারের আশঙ্কা রয়েছে।
এ ব্যাপারে বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, বর্তমানে ‘ঢাল জোবা’ চলছে। আবহাওয়াও বৈরী। যে কারণে কয়েক দিন ধরে ইলিশের আমদানি কমে গেছে। দামও কিছুটা বেড়েছে। তিনি আশা করেন, আগামী সপ্তাহেই এ অবস্থার উন্নতি হবে। কেন না, শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে সবচেয়ে বেশি ইলিশ পড়ে। কিছু দিনের মধ্যে সাগর ও নদীতে ইলিশ আসবে। ইলিশের বাজারও চাঙা হবে বলে ধারনা ড. বিমলের।