বিসিকে বৈধ কমিটিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় আরেক কমিটি !
Deprecated: preg_split(): Passing null to parameter #3 ($limit) of type int is deprecated in /home/barishaldorpon/public_html/wp-content/themes/jannah/framework/functions/post-functions.php on line 791
স্টাফ রিপোর্টার : বৈধ কমিটিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে জেলা বিএনপির সহ সভাপতি বাবুলকে নিয়ে গঠন করা হয়েছে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট বিসিক মালিক সমিতির আহবায়ক কমিটি।
অনুসন্ধান বলছে, ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় নেতাকর্মীরা কাজ না করেই বাংলাদেশ শিল্পমন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দকৃত প্রায় ৭০ কোটি টাকার ভাগ চায়। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রথম থেকেই সঠিকভাবে কাজ করার প্রতিশ্র“তি দিয়ে আসছেন বিসিক শিল্প ও প্লট মালিকদের। দাবীকৃত অর্থ দিতে অস্বীকার করায় নানা সময় বিভিন্নভাবে বিসিক মালিকদের হয়রানি করে আসছেন কতিপয় তথাকথিত নেতারা। বিসিক মালিকদের দাবী, সরকার যে অর্থ বিসিকের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বরাদ্দ দিয়েছেন, তা দিয়ে সঠিকভাবে উন্নয়নমূলক কাজ করা হচ্ছে।
তবে উক্ত উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্থ করে বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা চালায় বহিরাগত কিছু নেতাকর্মীরা। এর প্রতিবাদ করায় নানা সময় হয়রানির শিকার হতে হয়েছে বিসিকের শিল্প মালিকদের। চক্রটি এবার নতুন মিশনে নেমেছে।
কিছু বিএনপির জামাতের লোকজন দিয়ে একটি আহবায়ক কমিটি করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনী। শুধু বিএনপি-জামায়তের লোকজনই নয়, যাদের কোন প্লট এমনকি বিসিকে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নেই এমন ব্যক্তিদের নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে একটি অবৈধ কমিটি। কমিটির আহবায়ক বিএনপির নেতা ওয়ালী মোহাম্মদ খান শাওন নিজেকে বরিশাল আয়রণ এন্ড এলাইড ইন্ডাজট্রিজ কোম্পানির মালিক দাবী করলেও সরজমিনে এমন কোন প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নেই বিসিকে।
বরিশাল জেলা বিএনপিরসহ সভাপতি ও মের্সাস বাবুল কর্টন ইন্ডাস্ট্রিজ মালিক তোফাজ্জল হোসেন ওরফে বাবুল চৌধুরীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিসিক থেকে বরাদ্দ নেয়া প্লট কিছুদিন পূর্বে বিক্রি করে দেন বিসিকের আরেক ব্যবসায়ী ফরচুন সুজ কোম্পানির মালিকের কাছে। মো: সোহেল আলম প্রতিষ্ঠানের নাম ‘জিনিয়াস ব্যাগ’। অথচ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা অনুসন্ধানে দেখা মেলে সিনকো মোবাইল চার্জার কোম্পানির সাইন বোর্ড। অনুসন্ধান করে আরো দেখা যায়, বরিশাল আরিফ মেমোরিয়াল হাসপাতালের মালিক ডা: নজরুল ইসলামের স্ত্রীর নামে প্রতিষ্ঠানটি। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছেন, ‘গত আড়াই বছর পূর্বে জিনিয়াস ব্যাগ কোম্পানির মালিক সোহেলের কাছ থেকে ডা: নজরুল ইসলামের স্ত্রীর নামে প্লটটি ক্রয় করা হয়েছে।
বর্তমানে সোহেলের নামে কোন প্লট বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নেই।’ এদিকে সকাল সন্ধ্যা অফসেট প্রেস এর মালিক সঞ্জয় ঘোষ অফসেট প্রেসের নামে প্লট বরাদ্দ নিয়ে পেপসি কোম্পানির ডিলারশীপ হিসেবে ব্যবহার করছেন, যা বিসিক শিল্প আইন অনুযায়ী সম্পর্ণ অবৈধ। বিষয়টি নিয়ে স্বঘোষিত বরিশাল বিসিক প্লট ও শিল্প মালিকদের তৈরি করা নব কমিটির আহবায়ক ওয়ালী মোহাম্মদ খান শাওনকে সরজমিনে না পেয়ে ফোন করা হয়। তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বরিশাল জেলা সমাজসেবা সূত্র বলছে, ‘বরিশাল বিসিক শিল্প মালিক সমিতি এর কার্যনির্বাহী পরিষদে মো: মিজানুর রহমানকে সভাপতি ও মো: হাবিবুর রহমান মিলনকে সাধারণ সম্পাদক করে ১১ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী পরিষদের অনুমোদন দেয় উপ পরিচালক, জেলা সমাজসেবা, বরিশাল। যার মেয়াদকাল দেয়া হয়েছে ২০১৯ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের ১৪ নভেম্বর (দুই বছর) পর্যন্ত। বাংলাদেশ সমাজসেবা মন্ত্রণালয়ের আইন অনুযায়ী একই প্রতিষ্ঠানের একাধিক কমিটি করার কোন বিধান নেই।
নতুন কমিটি গঠন করতে হলে নির্বাচন অথবা সকল সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে কমিটি গঠন করতে হবে। তবে অনুমোদিত কমিটির সদস্যরা গঠনতন্ত্রবিরোধী কোন কার্যকালাপে লিপ্ত হলে জরুরী মিটিংএ সংখ্যাগরিষ্ঠদের মতানুযায়ী উক্ত কমিটি বিলুপ্ত করা যেতে পারে। এ প্রক্রিয়া ব্যতীত নতুন কোন আহবায়ক বা পুর্ণাঙ্গ কমিটি করার নিয়ম নেই। বরিশাল বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি মো: মিজানুর রহমান সময়ের বার্তাকে বলেন, ‘সরকার র্কর্তৃক অনুমোদিত কমিটির মেয়াদ আছে চলতি বছরের নভেম্বর মাসের ১৪ তারিখ পর্যন্ত। ওয়ালী মোহাম্মদ খান শাওনকে দিয়ে যে আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে তা সর্ম্পূণ বেআইনী।
এমনকি উক্ত কমিটিতে যাদের নাম উল্লেখ আছে, এদের বেশীর ভাগ প্রতিষ্ঠান মালিকরা ইতোপূর্বে ব্যবসা বন্ধ করে প্লট বিক্রি করে চলে গেছেন।’ মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও কি কারণে বহিরাগতদের দিয়ে আহবায়ক কমিটি করা হয়েছে, বিষয়টি বোধগম্য নয় বলে জানান তিনি। বিসিকের প্রকৃত প্লট মালিক ও শিল্প ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘বরিশাল বিসিক শিল্প নগরীর উন্নায়নমূলক কাজের জন্য শিল্পমন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দর্কৃত প্রায় ৭০ কোটি টাকার ভাগ না পেয়ে প্রথম থেকেই একটি চক্র নানা ষড়যন্ত্র করে আসছে। চক্রটিকে বর্তমান কমিটি কখনো প্রশ্রয় দেননি। যার ফলে নতুন একটি অবৈধ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সরকার কর্তৃক বরাদ্দকৃত বিসিকের উন্নয়নমূলক কাজ না করে অর্থ আত্মসাতের পায়তারা করছে চক্রটি।