বরিশালে টিসিবি’র পণ্য কিনতে গ্রাহকদের দীর্ঘ লাইন
Deprecated: preg_split(): Passing null to parameter #3 ($limit) of type int is deprecated in /home/barishaldorpon/public_html/wp-content/themes/jannah/framework/functions/post-functions.php on line 791
স্টাফ রিপোর্টার : বরিশালে টিসিবি’র পণ্য কিনতে স্বল্প আয়ের মানুষের লাইন দীর্ঘ হচ্ছে। ভিড় বেড়ে যাওয়ায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিও বেড়েছে। ৩-৪ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও পণ্য না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন অনেকে। তারা ট্রাকের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি পণ্যের পরিমাণও বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।
টিসিবি’র ডিলাররা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি এবং শারীরিক দূরত্ব রক্ষা করে পণ্য বিতরণের চেষ্টা করছেন তারা। টিসিবি থেকে দেওয়া পণ্য বিতরন শেষ হয়ে গেলে অতিরিক্ত মানুষকে পণ্য দেওয়ার ব্যবস্থা নেই তাদের কাছে। এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার।
আসন্ন ঈদ, বন্যা পরিস্থিতি এবং লকডাউনে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য গত ৫ জুলাই থেকে সারা দেশে নির্ধারিত দামে মশুর ডাল, চিনি এবং সয়াবিন তেল বিক্রি শুর করে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। বরিশাল বিভাগের ৬ জেলা, ৪০ উপজেলা এবং সিটি কর্পোরেশন এলাকায় টিসিবি’র ডিলার রয়েছে ২০২ জন। এর মধ্যে বরিশাল জেলা এবং নগরীতে রয়েছে ১০০ জন ডিলার।
শুক্রবার ব্যতীত প্রতিদিন গড়ে ২৪ জন ডিলারকে ৫০০ কেজি ডাল, ৪০০ কেজি চিনি এবং ১ হাজার লিটার সয়াবিন তেল সরবরাহ করছে টিসিবি। প্রতি কেজি ডাল ও চিনি ৫৫ টাকা করে এবং সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৯৯ টাকার লিটার দরে।
কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্প সংখ্যক ডিলার হওয়ায় প্রতিটি ডিলার পয়েন্টে গ্রাহকদের লাইন দীর্ঘ হচ্ছে স্বল্প আয়ের মানুষের। পুরুষের পাশাপাশি নারী ও শিশুরাও ব্যাগ হাতে দাঁড়াচ্ছেন লাইনে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও পণ্য না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন এদের অনেকে। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে রাস্তায় বসে পড়েন বয়স্ক ব্যক্তিরা। লাইন দীর্ঘ হওয়ায় অনেকে পণ্য না পাওয়ার আশঙ্কা নিয়েও দাঁড়িয়ে আছেন, যদি ভাগ্যগুণে পণ্য পান সেই আশায়। আবার ভিড় হওয়ায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ছে ডিলার পয়েন্টে।
লকডাউন পরিস্থিতিতে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য ডিলার সংখ্যা এবং পণ্যের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
বুধবার বেলা ১১টায় নগরীর আমতলা পানির ট্যাকিং এলাকার ডিলার পয়েন্টে গিয়ে দেখা গেছে, টিসিবি পণ্যবাহী ট্রাকের পেছনে দীর্ঘ লাইন। পুরুষ এবং নারীদের দুটি লাইন করা হয়েছে। ব্যাগ হাতে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে শিশুরাও। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বেড়ে যায় লাইনের দৈর্ঘ্য।
নাসিমা বেগম নামে এক নারী জানান, মঙ্গলবার নগরীর সাগরদী এলাকার টিসিবি ডিলার পয়েন্টে ৪ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর জানতে পারেন পণ্য শেষ। পরে পণ্য না নিয়েই খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাকে। আজ সকালেই আমতলা ডিলার পয়েন্টে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু লাইনে যত সংখ্যক মানুষ দাঁড়ানো তত পরিমাণ পণ্য ট্রাকে আছে কি না সন্দিহান তিনি। তারপরও লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন ভাগ্যগুণে যদি পণ্য পান সেই আশায়।
আব্দুল খালেক নামে এক বয়স্ক গ্রাহক জানান, গাড়ি আসার আগে সকাল সাড়ে ৮টায় লাইনে দাঁড়িয়েছেন। সকাল সাড়ে ১০টায় টিসিবি’র ডিলার গাড়ি পয়েন্টে আসে। কিন্তু তারা ধীর গতিতে পণ্য দেয়। এ কারণে লাইনে দাঁড়িয়ে ক্লান্ত হয়ে তিনি রাস্তায় বসে পড়েন। লাইনে দাঁড়ানো সব গ্রাহক টিসিবি’র ডিলার পয়েন্ট এবং একই সাথে পণ্যের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
টিসিবি ডিলার মো. জোবায়ের জানান, স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করে পণ্য বিক্রির চেষ্টা করছেন তারা। হ্যান্ড মাইকে কিছুক্ষণ পরপরই গ্রাহকদের সামাজিক দূরত্ব রক্ষা এবং মাস্ক পরার অনুরোধ করছেন। তিনি বলেন, আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে দেওয়া হচ্ছে টিসিবি পণ্য। পণ্য বিক্রি শেষ হয়ে গেলে অতিরিক্ত মানুষের জন্য কিছুই করার থাকে না তাদের।
টিসিবি গ্রাহকদের সমস্যা সমাধানে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার। তিনি বলেন, সীমিত সামর্থের মধ্যে সকলকে খুশি করতে হবে। ডিলার পয়েন্টে গ্রাহকদের ভিড় কমাতে ডিলার সংখ্যা এবং পণ্যের পরিমাণ বাড়ানোর কথা বলেন জেলা প্রশাসক।