পাল্টে যাচ্ছে দ্বীপ উপজেলা মেহেন্দিগঞ্জ
Deprecated: preg_split(): Passing null to parameter #3 ($limit) of type int is deprecated in /home/barishaldorpon/public_html/wp-content/themes/jannah/framework/functions/post-functions.php on line 791
স্টাফ রিপোর্টার : প্রমত্তা মেঘনা নদীর ভাঙনে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের প্রায় ৮০ ভাগ এলাকা বিলীন হয়েছে অনেক আগে।ভাঙনের হুমকিতে ছিল ঐতিহ্যবাহী উলানিয়া জমিদার বাড়ি, সাড়ে ৩শ’ বছরের পুরনো মসজিদ, বাজার এবং আশপাশের ৮০টি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান।
দেরিতে হলেও উলানিয়া এবং গোবিন্দপুর রক্ষায় ৩৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে স্বস্তি পেয়েছেন স্থানীরা। তবে বর্ষা ও বন্যায় জোয়ারের পানির প্লাবন রোধে এবার বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা। এ বিষয়ে সরেজমিন দেখে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক এমপি।
মেঘনা তীরবর্তী গোবিন্দপুর ইউনিয়নের প্রায় ৮০ ভাগ এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে অনেক আগে। নদী ভাঙনের কারণে আয়তনে ছোট হয়ে আসছিল ঐতিহাসিক উলানিয়া। হুমকিতে পড়ে ঐতিহ্যবাহী উলানিয়া জমিদার বাড়ি, সাড়ে ৩শ’ বছরের পুরনো উলানিয়া জমিদার বাড়ি মসজিদ, উলানিয়া বাজার এবং আশপাশের ৮০টি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় উলানিয়া ও গোবিন্দপুর রক্ষায় মেঘনা নদীর ৫.৪ কিলোমিটার তীর সংরক্ষণের জন্য ৩৮৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। ২০১৮ সালের এপ্রিলে সরেজমিন কাজ শুরু হয়। এ পর্যন্ত এই প্রকল্পের ৫৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে মেঘনা নদীর তীরে।
মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ কাজে খুশি স্থানীয়রা। তারা বলছেন, আয়তনে অনেক বড় ছিল গোবিন্দপুর এবং উলানিয়া ইউনিয়ন। নদী ভাঙনের কারণে দুই ইউনিয়নের আয়তন কমে আসছে। এতে সহায়-সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে অনেক পরিবার। দেরিতে হলেও নদীর তীর সংরক্ষণ করায় রক্ষা পেয়েছে হাজার হাজার বাড়িঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার মসজিদসহ বিস্তৃর্ণ ফসলী জমি।
তবে বন্যা এবং বর্ষার সময় জোয়ারের পানিতে লোকালয় তলিয়ে যাওয়ায় আতংক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এবার তারা বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি তুলেছেন।
স্থানীয় সংসদ সদস্য পংকজ নাথ বলেন, নদীর তীর সংরক্ষণ কাজে শুধু উলানিয়-গোবিন্দপুর নয়, পুরো মেহেন্দিগঞ্জ নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। সরকার হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জের নদী ভাঙন কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় খুশি জনসাধারণ। বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্লাবন থেকে স্থানীয় জনসাধারণের জানমাল রক্ষায় বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, যথা সময়ে শেষ হবে মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ। বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কাজের গুণগত মান নিশ্চিত করা হচ্ছে।
পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক এমপি বলেন, উলানিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান হচ্ছে। বেড়িবাঁধ দাবির বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এ বিষয়ে খতিয়ে দেখতে সরেজমিন বিশেষজ্ঞ দল পাঠাবেন। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দ্বীপ উপজেলা মেহেন্দিগঞ্জের মানুষের জানমাল রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
উলানিয়া-গোবিন্দপুর ছাড়াও একই আসনের হিজলার আলীগঞ্জে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণের আরেকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এছাড়া মেঘনার ভাঙন থেকে পুরাতন হিজলা, হরিনাথপুর এবং বাউশিয়া এলাকা রক্ষায় ৬০০ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্প একনেকে পাশের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য পংকজ নাথ।