কারামুক্তদের ভ্যান ও সেলাই মেশিন বিতরণ
Deprecated: preg_split(): Passing null to parameter #3 ($limit) of type int is deprecated in /home/barishaldorpon/public_html/wp-content/themes/jannah/framework/functions/post-functions.php on line 791
স্টাফ রিপোর্টার : দীর্ঘদিন সাজা ভোগ শেষে ৪ জন কয়েদীর মুক্তি এবং তাদের নতুন জীবনের সূচনার পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি ভ্যান এবং তিনটি সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে অপরাধী সংশোধন ও পূনর্বাসন সমিতি, সমাজসেবা অধিদফতর এবং বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার এর আয়োজনে এই ভ্যান ও সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়। বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন শেষে এই ভ্যান ও সেলাই মেশিন বিতরণ করেন।
জানা গেছে, আব্দুর রহমান মাঝি বরিশাল জেলার হিজলা উপজেলার গোয়াবাড়িয়া গ্রামে বসবাস। জীবন জীবিকার তাগিদে রিক্সা ভ্যান চালিয়ে স্ত্রী এবং তিন সন্তান কে নিয়ে কষ্টের মধ্যে দিয়ে জীবন যাপন করতেন ৬৪ বছরের দরিদ্র আব্দুর রহমান মাঝি।
তিনি একটি চুরি মামলায় এক বছর সশ্রম কারাদ-ে দ-িত ছিলেন তার সাজা ভোগের কিছুদিন বাকি থাকায় ২৬ মার্চ উপলক্ষে জেলখানায় তার আচার-আচরণ সবদিক বিবেচনা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ মুক্তি পান। বরিশাল জেলা প্রশাসক তার ভবিষ্যৎ জীবনের কথা বিবেচনা করে জীবিকা নির্বাহ করার জন্য একটি ভ্যান গাড়ী প্রদান করেন।
পিয়ারা বেগম বয়স ১১। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলো। ভালো মন্দ কিছু বুঝে উঠার আগেই জীবন যৌবন পার করেছে চার দেয়ালের মাঝে। সেইজে পুলিশ ২৪ এপ্রিল ১৯৯৭ সালে স্কুল থেকে ধরে নিয়ে এসেছে আর ফেরা হলোনা স্কুলে। দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হওয়ায় পরিবারের কেউ তেমন খোঁজ খবর নেয়নি তার। কিছুদিন পরে বাবার মৃত্যুতে হাড়িয়েছে অভিভাবকের ছায়া।
দীর্ঘ ২৬ বছর কারা ভোগের পরে গত ১০ জুন ২০২১ সালে বন্দি জীবনের অবসান ঘটে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার দরিদ্র কৃষক আনিস মৃধার মেয়ে পিয়ারা আক্তারের। তিন ভাই বোনের মধ্যে পিয়ারা সবার ছোট। পুকুরের পানিতে ডুবে চাচাতো বোনের মৃত্যুতে যাদব জীবন কারাভোগ করেন পিয়ারা।
এই ২৬ বছর জীবন থেকে হাড়িয়ে গেছে অনেক কিছু আজ সে ৩৮ বছরের একজন নারী। জীবনের বাকি সময় টুকু ভালো ভাবে ভালো কাজের মধ্যে দিয়ে জীবন যাপন করতে চায় পিয়ারা। তাই তাকে একটি সেলাই মেশিন প্রদান করেন জেলা প্রশাসক। খালেদা আক্তার চট্রগ্রামের মেয়ে তার স্বামী বাড়ি বরিশালের হিজলা উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে। খালেদার বয়স ৩৩ সে তিন সন্তানের জননী।
স্বামী শহিদ মোল্লা সরবোহারা ছিলেন ২০১৮ সালে পতিপক্ষ সারবোহারার হাতে নিহত হন। শশুর বাড়ির লোকেরা মিথ্যা মামলা দিয়ে স্বামীর হত্যা মামলায় খালেদা আক্তার কে জেলে পাঠান। মামলা চলমান এর মধ্য পার হয়ে গেছে চারটি বছর কারাভোগের। ৪ বছর পর গত তিন মাস আগে জামিনে মুক্তি পান খালেদা আক্তার। তিন সন্তান নিয়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে সে। জেলা প্রশাসক তাকেও একটি সেলাই মেশিন প্রদান করেন। আয়শা আক্তার বয়স ৩১ বরিশাল সিটি কর্পোরেশন পলাশপুর এলাকায় বসবাস করেন।
মাদক মামলায় ৩ বছর সাজা ভোগ করে গত ১ মাস হয় বের হয়েছে। অপরাধের জীবন ত্যগ করে সুন্দর জীবনের প্রত্যাশায় কাজ করতে চায় আয়শা।
জেলা প্রশাসক বরিশাল জসীম উদ্দীন হায়দার তার পরিবারের জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি চাকরি এবং সেলাই মেশিন প্রদান করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গৌতম বাড়ৈ, বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার প্রশান্ত কুমার বনিক, সহকারী কমিশনার সুব্রত বিশ্বাস দাস, প্রাবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ। পরিশেষে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার একটি ফলের গাছ রোপন করা হয়।