শাপলায় জীবিকার অন্বেষণ
Deprecated: preg_split(): Passing null to parameter #3 ($limit) of type int is deprecated in /home/barishaldorpon/public_html/wp-content/themes/jannah/framework/functions/post-functions.php on line 791
হাসান মাহামুদ : প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম আসলেই বৃষ্টি আর জোয়ারের পানীতে তলিয়ে যায় বিভিন্ন এলাকার নিন্মাঞ্চল। এক্ষেত্রে বিলাঞ্চলে পানীর প্রভাব থাকে সবচেয়ে বেশি। বর্ষায় বিলাঞ্চলের ফসলি জমি আর গ্রামীণ জনপদ তলিয়ে থাকায় দরিদ্র পরিবারদের হাতে কাজ থাকেনা। তাই পরিবারের অর্থনৈতিক চাঁকা সচল রাখতে বিলাঞ্চলের প্রাকৃতিক মাছ কিংবা সাদা শাপলায় জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক দরিদ্র পরিবার।
সরেজমিন বরিশালের আগৈলঝাড়া, উজিরপুর ও গৌরনদী উপজেলার বিলাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, প্রাকৃতিক ভাবে বিলের মাঝে ফুটে উঠছে জাতীয় ফুল শাপলা। আর এ শাপলা কে ঘিরেই পরিবারের প্রয়োজন মেটানোর আশায় দরিদ্র পরিবারের সদস্যরা ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে বিলের মাঝে শাপলা তুলতে ব্যস্ত হয়ে পরছেন। গ্রাম কিংবা শহরে শাপলা কদর বৃদ্ধি পাওয়ায় চাহিদাও বেড়েছে ব্যাপক।
আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের একাধিক দরিদ্র শাপলা বিক্রেতারা জানান, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে প্রায় চার থেকে পাঁচ মাস বিলের মধ্যে পানী থাকে। তখন এলাকায় কৃষি কাজ কমে যায়। আর্থিক সংকটের কারনে তাদের শাপলা কিংবা বিলের মাছ বিক্রি করে চলতে হয়। শাপলা বিক্রিতে বড় ধরনের কোন মূলধনের প্রয়োজন না হওয়ায় দরিদ্র পরিবারের অনেকেই বর্ষার মৌসুমে শাপলা বিক্রি করছেন। তবে আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহারসহ উজিরপুর উপজেলার কয়েকটি বিলে স্থানীয় প্রভাবশালীরা মাছ চাষ করায় এখন আর আগের মত বিলে শাপলা ফুটছে না। এমনকি প্রাকৃতিক মাছও বিলে ঢুকতে পারছেনা। ফলে শাপলা বিক্রেতা ও বিলের প্রাকৃতিক মাছ শিকারীদের আয় অনেকটাই কমে গেছে।
আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের লখারমাটিয়া গ্রামের বাসিন্দা হৃদয় রায়, চিত্ত রঞ্জন বৈদ্য, নিতাই বৈদ্যসহ একাধিক শাপলা বিক্রতারা জানান, বর্ষায় হাতে কাজ নেই। তাই গত দুই মাস যাবত শাপলা বিক্রি করছেন। প্রতিদিন পরিবারের সদস্যরা বিলের মাঝে ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে শাপলা তুলে আনেন। এরপর শাপলার মুঠো বেঁধে ভ্যানে সাজিয়ে সকাল হলেই শাপলা বিক্রিতে নেমে পরেন। শাপলাগুলো গৌরনদী বন্দর, টরকী বন্দরসহ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করে থাকেন। বর্ষার শুরুতে শাপলার দাম কিছুটা ভাল থাকলেও এখন তিন মুঠো শাপলা বিক্রি করতে হয় ১০ টাকা। তবে বাজারে একেক সময় একেক রকম দাম থাকে। তাদের মতো আরও অনেকেই শাপলা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন বলেও তারা উল্লেখ করেন।
গৌরনদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মামুনুর রহমান জানান, শাপলা জাতীয় ফুল হলেও সবজি হিসেবে শাপলার কদর রয়েছে। এছাড়াও শাপলায় প্রচুর পরিমানে আয়রণসহ নানাবিদ পুষ্টিগুন রয়েছে।