গ্রেফতারের পরও বরখাস্ত হয়নি ভোলার সেই অফিসার
Deprecated: preg_split(): Passing null to parameter #3 ($limit) of type int is deprecated in /home/barishaldorpon/public_html/wp-content/themes/jannah/framework/functions/post-functions.php on line 791
ভোলা প্রতিনিধি : ভোলায় জাল জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া সনদপত্র দিয়ে সুইপার থেকে অফিসার হওয়া সেই সরকারি কর্মচারী স্বাস্থ্য সহকারী আব্দুল হাইর বিরুদ্ধে গত ৬ মাসেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার ছাড়াও একাধিক ব্যক্তি ভোলার সিভিল সার্জন বরারবর লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরও কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। বরং উক্ত কর্মচারী আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সর্বশেষ গত একমাস আগে সেই স্বাস্থ্য সহকারী ফৌজদারি মামলার ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী আব্দুল হাইকে ভোলা থানা পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। পরে আদালত তাকে জামিন প্রদান করেন। এই ঘটনার একমাস পরও আব্দুল হাই বিরুদ্ধে কোন আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
এ নিয়ে ভোলার সিভিল সার্জন এবং সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জন মনে। প্রশ্ন উঠেছে সারকারি বিধি বহির্ভূতভাবে সুইপার থেকে অফিসার হওয়া আব্দুল হাই আত্মসাতকৃত সরকারি অর্থ দিয়েই কি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকে ম্যানেজ করে এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। তা না হলে তার ক্ষমতার উৎস্য কোথায়। কর্তৃপক্ষ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার পরও কোন কোন ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। তবে এ বিষয়ে সিভিল সার্জন বলছেন অভিযুক্ত আব্দুল হাইর বিরুদ্ধে তার করার কিছু নেই। এ ব্যপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্যবস্থা নিবেন। অপর দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলছেন এটা সিভিল সার্জন দেখবেন।
স্থানীয় একাধিক সুত্র জানায়, ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য সহকারী আব্দুল হাই পিতা: মৃত মুজাফ্ফর হোসেন, ৮ম শ্রেণি পাশের সনদপত্র দেখিয়ে ১৯৮৭ সালে ভোলা সদর হাসপাতালে সুইপার/ঝাড়–দার হিসেবে নিয়োগ নিয়েছেন। পরবর্তীতে তিনি জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ১৯৮১ সালে মাত্র ১১ বছর বয়সে ভোলা দারুল হাসিদ আলিয়া মাদ্রাসা থেকে দাখিল (এসএসসি) পাশ করেছেন মর্মে একটি সনদপত্র দেখিয়ে সরকারি বিধি বহির্ভূতভাবে স্ববেতনে স্বাস্থ্যসহকারী পদে পদোন্নতি নিয়েছেন।
কিন্তু রহস্যজনকভাবে বর্তমানে তিনি সমুদয় ইনক্রিমেন্টসহ স্বাস্থ্যসহকারীর বেতন ভাতা উত্তোলন করে সরকারের লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করছেন। এছাড়া তিনি সুইপার হয়ে সনদপত্র ছাড়াই অবৈধভাবে এলাকায় একটি ঔষধের দোকান দিয়ে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিচ্ছেন এবং চিকিৎসা সেবার নামে প্রতারণা করে গ্রামবাসীর কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
এদিকে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে ভোলার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিগত চলতি বছরের ০২ মে একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়। উক্ত মামলায় বিজ্ঞ আদালত আ: হাইর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরওয়ানা (ওয়ারেন্ট) জারি করেন। উক্ত ওয়ারেন্টমূলে পুলিশ বিগত ১২ মে স্বাস্থ্য সহকারী আ: হাইকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেন।
পরবর্তীতে আদালত তাকে জামিন দেন। এমতাবস্থায় সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধি ও বি,এ,আর মোতাবেক স্বাস্থ্য সহকারী আ: হাই গ্রেফতার হওয়ার দিন অর্থাৎ ১২ মে ২০২১ ইং তারিখ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার কথা। কিন্তু অদ্যাবদি তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এদিকে উক্ত মামলার বাদি আব্দুল মান্নান ও তার ছেলে ইব্রাহিম জানান, বিষয়টি সিভিল সার্জনকে জানালে তিনি বলেন লিখিত অভিযোগ ছাড়া কোন ব্যবস্থা নেয়া যায় না।
পরবর্তীতে তার কাছে মামলা, ওয়ারেন্ট, গ্রেফতার এবং জামিন সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র সহ লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এরপর সিভিল সার্জন বলেন, এ ব্যপারে তার কিছু করার নেই। এদিকে সংবাদিকের তথ্যানুসন্ধ্যানে জানা যায়, সিভিল সার্জন অফিসের এক সহকারীর মাধ্যমে মোটা অংকের লেনদেন হওয়ায় অফিস আব্দুল হাইর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তবে অফিস প্রধান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।