নিহত যুবকের লাশ নিয়ে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ
Deprecated: preg_split(): Passing null to parameter #3 ($limit) of type int is deprecated in /home/barishaldorpon/public_html/wp-content/themes/jannah/framework/functions/post-functions.php on line 791
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালে গোয়েন্দা পুলিশের নির্যাতনে এক যুবকের মৃত্যুর প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত পুলিশের কঠোর বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ এবং মহাসড়ক অবরোধ করেছে এলাকাবাসী। এ সময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী নগরীর সাগরদী শের-ই বাংলা সড়কে গোয়েন্দা পুলিশের অভিযুক্ত উপ-পরিদর্শক মহিউদ্দিনের বাসার জানালার গ্লাস ভাংচুর করে। খবর পেয়ে মেট্রো পুলিশের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের বিচারের আশ্বাস দেয়ায় অবরোধ তুলে নেয় বিক্ষুব্ধরা। এ ঘটনা তদন্তে মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনারকে (দক্ষিণ) প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ।
শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রবিবার দুপুরের পর ময়না তদন্ত শেষে বিকেল ৫টার দিকে রেজাউল করিমের লাশ তার নিজ বাড়ি নিয়ে যায় স্বজন সহ এলাকাবাসী। এ সময় উত্তেজিত বাসিন্দারা রেজাউল হত্যার বিচারের দাবিতে তার লাশ নিয়ে সাগরদী মাদ্রাসার সামনে মহাসড়ক অবরোধ করে। মাদক উদ্ধারের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে উপ-পরিদর্শক মহিউদ্দিন স্থানীয় যুবক রেজাউলকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে দাবি করে অভিযুক্তের বিচার দাবী করেন বিক্ষুব্ধরা। এ সময় মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে রেজাউল হত্যার বিচার দাবিতে নানা শ্লোগান দেয় তারা। খবর পেয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষণি) মো. মোক্তার হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আশ্বাস দিলে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে অবরোধ তুলে নেয় তারা।
এরপরই তারা সংলগ্ন শের-ই বাংলা সড়কে গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মহিউদ্দিনের নিজ বাস ভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করে এবং ইটপাটকেল ছুড়ে তার বাসার ১০টিরও বেশি জানালার গ্লাস ভাংচুর করে। এ সময় কোতয়ালী থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এদিকে গোয়েন্দা পুলিশের নির্যাতনে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ তদন্তে মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার মো. মোক্তার হোসেনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন পুলিশ কমিশনার।
গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর সাগরদী হামিদ খান সড়কের সন্মুখের একটি চায়ের দোকান থেকে রেজাউল করিমকে আটক করে স্থানীয় বাসিন্দা ও গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মহিউদ্দিন। এ সময় মহিউদ্দিন তার পকেট থেকে ১৩৮ গ্রাম গাঁজা এবং ৪টি মরফিন ইনজেকশন উদ্ধারের দাবি করলেও স্থানীয় কোন প্রত্যক্ষদর্শীকে সাক্ষী করেননি। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে নগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে উপস্থাপন করা হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপ-পরিদর্শক মহিউদ্দিন বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে কোতয়ালী মডেল থানায় মাদক আইনে একটি মামলা দায়ের করে। পরদিন শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে প্রেরন করে পুলিশ।
কারাগারের জেলার মো. শাহেআলমের দাবী রেজাউল করিমকে কারাগারে নেয়া হয়েছে মেডিকেল সার্টিফিকেট সহ শরীরে ফুলা জখম অবস্থায়। আদালতের নির্দেশ প্রথমে তাকে কারা হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাত ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে তাকে শের-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের বাবা মো. ইউসুফ মুন্সির অভিযোগ, তার ছেলেকে সুস্থ-সবল অবস্থায় ধরে নিয়ে যায় এসআই মহিউদ্দিন। এ সময় তিনি তাকে ছেড়ে দেয়ার অনুনয়-বিনিনয় করলেও তাকে উল্টো অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে মহিউদ্দিন। পুলিশ তার কাছ থেকে মাদক উদ্ধারের দাবী করলেও স্থানীয় কোন প্রত্যক্ষদর্শী নেই। গোয়েন্দা পুলিশ নির্যাতন করে রেজাউলকে হত্যা করেছে দাবী করে অভিযুক্ত পুলিশের বিচার চান তিনি।
নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাগরদী হামিদ খান সড়কের বাসিন্দা ও সাগরদী বাজারের মাংশ ব্যবসায়ী মো. ইউনুস মুন্সির ছেলে রেজাউল করিম রেজা (৩০) সদ্য এলএলবি পাশ করে। দুই ভাইয়ের মধ্যে সে বড়। তার স্ত্রী রয়েছে।